কেকেআরের ম্যাচ বাকি দুই, প্লে অফ নিশ্চিত করতে হলে জিততে হবে এক। কিন্তু প্রথমে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স এবং শেষে রাজস্থান রয়্যালস— দু’টো ম্যাচ হেরে আইপিএল থেকেই বিদায় হয়ে গেল কেকেআরের।
মে ২০১৬: কেকেআরের ম্যাচ বাকি চার, প্লে অফ নিশ্চিত করতে হলে জিততে হবে অন্তত দুই। আসন্ন প্রতিপক্ষরা এ বারও হেভিওয়েট। ধোনির পুণে। বিরাটের আরসিবি। রায়নার গুজরাত। ওয়ার্নারের হায়দরাবাদ। কেকেআর পারবে?
সোমবার কেকেআর টিম হোটেলে গিয়ে দেখা গেল, টেনশনটা কারও কারও মনে একটু হলেও চেপে বসেছে। আসলে গত বারও কেকেআর গ্রুপে প্রথম থেকে শেষ এ রকমই লিগ টেবলের প্রথম চারে ঘোরাফেরা করেছে। কিন্তু মুম্বইয়ে দু’টো ম্যাচ হেরে সব ওলটপালট হয়ে যায়। টিমের সঙ্গে সাধারণত থাকেন এমন এক জন এ দিন বলছিলেন যে, গত বার মুম্বই-পর্বটা এত আকস্মিক ছিল যে প্রথমে বিশ্বাস হয়নি। টিমে নাকি বলাবলি চলছিল, খেলা এর পর কোথায় পড়তে পারে। প্লে অফ খেলতে কোথায় যেতে হবে। কিন্তু দ্রুত কিছু বুঝে ওঠার আগেই দেখা যায়, সব শেষ। তবে এটাও তাঁর মনে হচ্ছে যে, এ বার টিম অনেক ভাল খেলছে। টেনশন হচ্ছে ঠিকই। কিন্তু প্লে অফ যাওয়ার সম্ভাবনা গত বারের চেয়ে এ বার অনেক বেশি।
এবং ইউসুফ পাঠানের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পেলে নাইট সমর্থকদের বিশ্বাসটা আরও বাড়তে পারত। রবিবারকে আইপিএল নাইনের একটা বিরল দিনই বলতে হবে। যেখানে ইউসুফ পাঠান দুর্দান্ত খেললেন, কিন্তু টিম জিততে পারল না। এ দিন টিম হোটেলের পুলের ধারে বসে সিনিয়র পাঠান বলছিলেন, ‘‘এক দিক থেকে ভাল হল যে হারটা এখন হল। যা যা ভুল হওয়ার এখন হচ্ছে। আমরা বুঝে নিতে পারছি কোথায় গণ্ডগোল, কোথায় আরও উন্নতি দরকার। পরে আরও কয়েকটা ম্যাচ আছে। ওয়েক আপ কলটা এখন হলে ভালই হয়।’’ বরোদা বম্বার দুঃখ করছিলেন যে, তিরিশ রানের মধ্যে কেকেআরের টপ অর্ডারের চার জন আউট হয়ে যাওয়ার পরেও রানটা খারাপ ওঠেনি। ভাল জায়গায় নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়েছিল। কিন্তু গুজরাত লায়ন্সের পাওয়ার প্লে-র সময় কেকেআর ভাল বল করতে পারল না।
‘‘ওরা ছ’ওভারে প্রায় পঞ্চাশ তুলে দিল। আমাদের পুরো টপ অর্ডার ব্যর্থ হচ্ছে, এটা খুবই কম হয়,’’ বলছিলেন ইউসুফ। একটু থেমে ফের যোগ করলেন, ‘‘এ বারের আইপিএলে তো এই প্রথম হল। তার পরেও রানটা খারাপ তুলিনি। যা-ই হোক, এ রকম দিন আসতেই পারে। একটা খারাপ দিন যেতেই পারে। কিন্তু আমরা যে খারাপ খেলছি সেটা তো বলা যাবে না।’’
কিন্তু গত বারের আশ্চর্য বিদায়? এ বার তেমন অঘটন ঘটবে না তো? চারটের মধ্যে দু’টোয় তো জিততেই হবে। তার উপর আবার ধোনি। কোহালি।
আর তখনই প্রথম ছক্কাটা উড়ে গেল গ্যালারিতে। ‘‘আরে, দু’টো জয় দু’টো জয় করছেন কেন? আমরা কেন চারটেই জেতার কথা ভাবব না?’’ ঝাঁঝিয়ে ওঠেন একটু। সঙ্গে দ্রুত যোগ করেন, ‘‘আর আমরা তো ভাল ক্রিকেট খেলছি। ব্যাটিং, বোলিং দু’টোই ভাল হচ্ছে। তা হলে প্লে অফ যাব না কেন? তা ছাড়া গত বার আমরা বেশ কয়েকটা ক্লোজ ম্যাচ হেরে গিয়েছিলাম। এ বার তো তা নয়। এ বার ক্লোজ ম্যাচ আমরা জিতেছি।’’ কিন্তু ধোনি-কোহালি? তাঁদের বিরুদ্ধে কী হবে? টিমের পরের দু’টো ম্যাচই যে তাঁদের বিরুদ্ধে? পাঠানের ছোট অথচ দাপুটে জবাব, ‘‘হ্যাঁ, কিন্তু আমাদের টিমেও তো বড় বড় প্লেয়ার কম নেই। ওদের টিমেও ওরা ছাড়া আরও দশ জন আছে। একজন বা দু’জনকে নিয়ে ভাবা কিন্তু পেশাদার ক্রিকেটে যায় না। বিরাট দারুণ খেলছে। কিন্তু কে বলতে পারে, আমাদের বিরুদ্ধে ওরা তাড়াতাড়ি আউট হয়ে যাবে না?’’
No comments:
Post a Comment