Blogger Tips and TricksLatest Tips And TricksBlogger Tricks

Monday, May 16, 2016

এই ইউসুফই আমাকে বলেছিল, বসিয়ে দাও | গৌতম গম্ভীর - আনন্দবাজার

শনিবারের লড়াইটা বৃষ্টির কাছে প্রায় হেরেই গিয়েছিলাম আমরা। তবে হ্যাঁ, আবহাওয়ার পূর্বাভাসে আমি খুব একটা বিশ্বাস করি না। প্রায়ই এ ব্যাপারটায় ঠকে যাই। আমার যে সব টিমমেট ওদের মোবাইল অ্যাপসে আবহাওয়ার রিপোর্টের দিকে নজর রাখে, তারা আমাকে বলে, বৃষ্টিটা ঈশ্বরের পরিকল্পনার ভেতর কখনও পড়ে না। কিন্তু তবুও সর্বশক্তিমান নিশ্চয়ই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, কেকেআরের আরও কিছু পাকা দাড়ি গজাবে!

প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে আমাদের ভেবে যেতে হল, বোলাররা এত ভাল করার পরেও দু’পয়েন্ট পাব কি না? ওই দু’ঘণ্টা আমাদের সবার কাছে  সবচেয়ে চাপের ছিল। সবচেয়ে খারাপ মুডে ছিলাম আমি। সতীর্থদের চিৎকার-টিৎকার ভাল লাগছিল না। ই়ডেনের ড্রেসিংরুমে সব সময় যে অসাধারণ খাবার পাঠানো হয়, সে সবও উপভোগ করছিলাম না। শুদ্ধু এই ম্যাচ থেকে দু’পয়েন্ট নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলাম।
প্রার্থনা করার বাইরে আমি সিএবি প্রেসি়ডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় আর ওঁর কর্মীদের ধন্যবাদ না জানিয়ে পারছি না। বৃষ্টি থামার পর ই়়ডেনে ওঁরা যে কর্মদক্ষতা দেখালেন, তার জন্য। আমি নির্দ্বিধায় বলতে পারি, ভারতের আর কোনও মাঠে এত তাড়াতাড়ি খেলা শুরু করা যেত না। একসঙ্গে অত হাত আর সুপার-সপারের নাগাড়ে কাজ করে চলাটা দেখার মতো!
এ রকমটা দাদার টিম এই প্রথম বার করল, তা অবশ্য নয়। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচেও ওরা একই কাজ করে দেখিয়ে দিয়েছিল। সে দিন টানা বৃষ্টি হয়েছিল। সত্যি বলতে শনিবারের চেয়ে অনেক বেশি। তা সত্ত্বেও সে দিনের মার্কি লড়াই ১৮ ওভারের করা সম্ভব হয়েছিল। অসাধারণ! সুতরাং পুণের বিরুদ্ধে আমাদের ম্যাচে আসল ম্যান অব দ্য ম্যাচ সিএবির মাঠকর্মীরা।
ধন্যবাদ দেব ই়ডেন দর্শকদেরও। তাঁদের ধৈর্যের জন্য। হোম ক্যাপ্টেন হিসেবে আমার পক্ষে এটা দেখা অসাধারণ যে, দর্শকরা অতক্ষণ বৃষ্টি সামলে অপেক্ষা করলেন কেকেআরের আবার মাঠে ঢোকার জন্য। এটা আমাদের প্রতি ওঁদের অসাধারণ এবং নিঃশর্ত ভালবাসার জলজ্যান্ত প্রমাণ।
আর এ রকম পরিস্থিতিতে সবচেয়ে ভাল ব্যাপার ছিল, কলকাতার ভালবাসার ছেলে ইউসুফ পাঠানের ম্যাচ ফিনিশ করে আসাটা। ও অসাধারণ মুডে ছিল। পুণের প্রধান বোলারদের বিন্দুমাত্র সম্মান দেখায়নি। আত্মবিশ্বাস জিনিসটা যে কী ঘটাতে পারে ভাবা যায় না! এটা সেই ইউসুফ পাঠান যে কিনা কিছু দিন আগেই আমার কাছে এসেছিল ওকে প্রথম এগারো থেকে বসিয়ে দেওয়ার অনুরোধ নিয়ে। কারণ ওর নাকি মনে হয়েছিল, পরের রানটা কোত্থেকে আসবে জানে না! সত্যিই খুব খারাপ অবস্থা ছিল ওর, তবে সব সময় ভাল করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞও ছিল।
আমি ওর ভাল পারফরম্যান্সের জন্য নিজে কোনও কৃতিত্ব দাবি করছি না। কিন্তু আমি জানতাম বরোদা বম্বার একজন স্পেশ্যাল প্লেয়ার। ও নিজেকে কঠিন জায়গায় ফেলেই নিজের আসল চেহারাটা ফিরে পেয়েছে। ভারতীয় দল যে লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যানের খোঁজে রয়েছে, সেটা কিন্তু ইউসুফ হতে পারে। এ বার আইপিএলে ও ইতিমধ্যেই সাত বার নট আউট থেকেছে। ম্যাচ শেষ করে আসার গুরুত্ব ও যে কত ভাল বোঝে এটা তারই প্রমাণ।
কেকেআর ড্রেসিংরুমের আরও এক়টা মুক্তো হল পীযূষ চাওলা। লেগি ওর ছিপে জর্জ বেইলি আর থিসারা পেরেরা নামক ফের দু’টো বড় মাছ ধরল। আশা করছি, আজ সোমবার রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে আমাদের ম্যাচেও পীযূষ ওর উইকেট তোলার ফর্ম বজায় রাখবে। বিরাট কোহালি আর এবি ডে’ভিলিয়ার্স তো বোলারদের সঙ্গে রীতিমতো দুর্ব্যবহার করছে! তাদের অহংয়ে যেন ঘুসি চালাচ্ছে! কুড়ি ওভারের ইনিংসে দু’জন সেঞ্চুরি করছে— অবিশ্বাস্য! ওরা দু’জন যে ম্যাচে খেলবে তার টিকিটের দাম সংগঠকেরা আরামসে দ্বিগুণ করে দিতে পারেন।
প্রার্থনা করা যাক, সোমবার বৃষ্টি আসবে না। আর ই়়ডেনের দর্শক একটা ভাল ক্রিকেট ম্যাচ দেখবেন।

No comments:

Post a Comment