আইএসএল খেলতে হলে মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল বা বেঙ্গালুরু এফসি-কে ঠিক কত টাকা ফ্র্যাঞ্চাইজি ফি বাবদ দিতে হবে সংগঠকদের?
বাগান সচিব অঞ্জন মিত্রর কাছে খবর, পঁচিশ কোটি টাকা!
ইস্টবেঙ্গলর অন্যতম শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকারের আশঙ্কা, আটলেটিকো কলকাতার মতো টিমগুলো পনেরো কোটি টাকা দিয়েছিল আইএসএল খেলার জন্য। তাঁদের কাছেও সেই রকমই চাওয়া হবে।
আইএসএল-আই লিগ মিশে যাওয়া নিয়ে আলোচনা করতে আজ মঙ্গলবার দিল্লির পাঁচতারা হোটেলে সভা ডেকেছেন প্রফুল্ল পটেল অ্যান্ড কোম্পানি। দেশের ২৯ ক্লাবের প্রতিনিধিরা, চুনী গোস্বামী, ভাইচুং ভুটিয়া, ফেডারেশন কর্তারা থাকবেন সেখানে। সভায় যোগ দিতে যাওয়ার আগে হঠাৎ-ই জোট বেঁধে ফেলল দুই প্রধান। যার কারণ, নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষা। বাগান সচিব ফেডারেশনের বিরুদ্ধে তোপ দেগে দিলেন, ‘‘পঁচিশ কোটি কেন, এক টাকাও ফ্র্যাঞ্চাইজি ফি দেব না। লাখ-লাখ সমর্থক আমাদের। আইএসএলের আট ফ্র্যাঞ্চাইজির কারও আছে? টাকা চাইলে মামলা হবে। সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত যাব।’’ আর দেবব্রতবাবু সরাসরি মামলার কথা না বললেও এ দিন সাফ বলে দিলেন, ‘‘আমাদের সদস্য-সমর্থকদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। আইএসএল খেলার জন্য এক টাকাও দিতে রাজি নয় কেউ। সেটাই আমাদের প্রতিনিধি ফে়ডারেশনের সভায় বলবেন। আমরা সব পথই খোলা রাখছি।’’
ভারতীয় ফুটবলের অন্দরে এখন কান পাতলে শোনা যায়, নীতা অম্বানীদের কোম্পানির টাকায় চলে ফেডারেশন। ঢাল-তলোয়ারহীন ফেডারেশন প্রেসিডেন্ট প্রফুল্ল পটেল বা ভাইস প্রেসিডেন্ট সুব্রত দত্তদের যে তাই সেই কোম্পানির অঙ্গুলি হেলনে চলতে হবে সেটাই তো স্বাভাবিক। আইএসএল কর্তৃপক্ষ যা চাইবেন তাই হবে ভারতীয় ফুটবলে। আলোচনা সভাটা মনে করা হচ্ছে— লোক দেখানো! যেটা হয়তো বুঝে গিয়েছেন দুই প্রধানের ধুরন্ধর কর্তারা। শোনা যাচ্ছে, ফিফা কংগ্রেস থেকে সোমবারই দেশে ফেরা প্রফুল্ল পটেল এবং ফেডারেশন সচিব কুশল দাশ নাকি ফতোয়া জারি করেছেন, এই সভা নিয়ে কোনও সমালোচনামূলক মন্তব্য করা যাবে না। এ দিন দিল্লি থেকে ফেডারেশনের এক প্রভাবশালী কর্তা অবশ্য বললেন, ‘‘আমরা দু’টো লিগ মিলিয়ে একটা লিগ করতে চাই। সেটা কী ভাবে করা যায় তা নিয়েই সভায় আলোচনা হবে। কোনও ক্লাবকেই ফ্র্যাঞ্চাইজি ফি-র বিষয়ে কেউ কথা বলেনি।’’
২০১৭-১৮ মরসুমেই এক লিগ চালু হবে বলে আপাতত ঠিক আছে। ব্যক্তিগত মালিকানাধীনের সঙ্গে জনগণের ক্লাবের মিলন কী ভাবে হবে তা নিয়ে এক বছর ধরে কাজ করে চলেছেন পুণে এফসি-র সঙ্গে একদা যুক্ত ফুটবল কর্তা। সভায় তাঁর তৈরি রূপরেখা পুরোপুরি খোলসা করা হবে কি না তা এখনও পরিষ্কার নয়। তবে ফেডারেশনের এক কর্তা বললেন, ‘‘ফেলো কড়ি মাখো তেল, এটা বুঝিয়ে দেওয়া হতে পারে।’’
সেটা কী রকম? জানা গেল, এ বার তিন বিভাগে হতে পারে আইএসএল। প্রথম বিভাগ বা প্রিমিয়ার লিগে দশ-বারোটা টিম থাকবে। দ্বিতীয় বিভাগ বা প্রথম ডিভিশনে খেলবে আরও দশ-বারোটা টিম। তৃতীয় বিভাগ বা দ্বিতীয় ডিভিশনে খেলবে অবশিষ্ট টিমগুলো। সব ডিভিশন চলবে এক সঙ্গে এবং দেখানো হবে টিভিতে। এখন পর্যন্ত ঠিক আছে প্রিমিয়ারে খেলতে হলে নিলামে অংশ নিতে হবে আই লিগের দলগুলোকে। দর উঠতে পারে ১৫ থেকে ৪০ কোটি টাকা। যাদের পোষাবে তারাই থাকবে। স্পনসরহীন মোহনবাগান এবং ইস্টবেঙ্গলেরও যে নিলামে জেতা কার্যত সম্ভব নয়। এবং সেটা না হলে পরের লিগে অর্থাৎ প্রথম ডিভিশনে খেলতে হবে দুই প্রধানকে। আর সে রকম ঘটলে শতবর্ষ পেরোনো বাগান এবং শতবর্ষের দরজায় দাঁড়ানো বা বেঙ্গলকে টপকে প্রিমিয়ারে খেলবে দু’বছর বয়সি আটলেটিকো দে কলকাতা।
No comments:
Post a Comment