আজকালের প্রতিবেদন: ম্যাচের ৩৬ মিনিটের মাথায় লাল কার্ড দেখে মাঠ ছেড়ে চলে গেলেন মাসচেরানো। পুরো নব্বই মিনিট পার হয়ে যাওয়ার পরও স্কোরলাইন রইল গোলশূন্য। লুইস এনরিকের কপালের বলিরেখা যখন ক্রমশই গভীর হচ্ছে, তখনই যাবতীয় দুঃশ্চিন্তার নিরসন। অতিরিক্ত সময়ে একটা নয়, দু-দুটো গোল করে কোপা দেল রে চ্যাম্পিয়ন হল বার্সিলোনা। রবিবার রাতে মাদ্রিদের ভিসেন্টে কালডেরন স্টেডিয়ামে কাতালান ‘দৈত্য’রা ২-০ ব্যবধানে সেভিয়াকে হারিয়ে কোপা দেল রে জিতে নিল। এই নিয়ে ২৮ বার কোপা দেল রে চ্যাম্পিয়ন হল বার্সা।
৯০ মিনিট গোলশূন্য থাকার পর বার্সার হয়ে জোর্ডি আলবা এবং নেইমার গোল করে গেলেন। ম্যাচের বেশির ভাগ সময় এনরিকের দল ১০ জনে খেললেও, ম্যাচ থেকে কখনও হারিয়ে যায়নি। বরং, নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার পরও ম্যাচ যখন গোলশূন্য, সে সময় সেভিয়ার এভার বানেগা ম্যাচ থেকে বহিষ্কৃত হলেন আর তার পরই আরও জাঁকিয়ে বসল এনরিকের ছেলেরা। ৯৭ মিনিটে লিওনেল মেসির সাজিয়ে দেওয়া বলে জোরাল শট নিয়ে বার্সাকে ১-০ এগিয়ে দিলেন উইংব্যাক আলবা। এর ঠিক পরেই সেভিয়ার হয়ে দ্বিতীয় লালকার্ড দেখলেন ক্যারিকো, মাঠে অসদাচারণের জন্য। আর সেই সঙ্গেই শেষ সদ্য ইউরোপা লিগজয়ী ক্লাবের যাবতীয় প্রতিরোধ। এর পর ম্যাচের বাকি সময়টা মাঠ জুড়ে শুধুই বার্সিলোনা। লা লিগা চ্যম্পিয়নদের হয়ে ব্যবধান বাড়ালেন নেইমার। এই গোলের ক্ষেত্রেও সিংহভাগ কৃতিত্ব সেই মেসিরই। ম্যাচ শেষ হওয়ার পর আলবার মুখে স্বস্তির সুর। বলেই ফেললেন,‘সেভিয়ার মতো দলের বিপক্ষে ম্যাচের প্রথমদিকে ১০ জন হয়ে গিয়ে লড়াই করাটা যথেষ্ট কঠিন। তবুও, যে শেষমেশ জয় পেয়েছি এবং তাতে আমারও অবদান রইল, এটাই আনন্দের।’ বার্সার ভুবনবিখ্যাত ‘ত্রিভূজ’কে এদিন চেনা মেজাজে পাওয়া যায়নি। নেইমার গোল করেছেন, এমনকী বার্সার দুটো গোলের পিছনেই মেসির সাজিয়ে দেওয়া বল। কিন্তু সুয়ারেজ? কোপা দেল রে ফাইনালে দলের দ্বিমুকুট জয়ের রাতেও উরুগুয়ান ‘বোমারু’-র চোখে জল! ম্যাচের বয়স যখন ৬০ মিনিট, পায়ের পেশিতে চোট পেয়ে সুয়ারেজ খোঁড়াতে খোঁড়াতে বেরিয়ে গেলেন। বার্সা–র ডাগ-আউটে বসে কাঁদতেও দেখা গেল তাঁকে। আর ইনিয়েস্তা? যিনি দিন দুয়েক আগেই সেভিয়া নিয়ে নিজের দলকে সতর্ক করে দিয়েছিলেন, সেই তিনিই রবিবার ফাইনালের রাতে ম্যাচের সেরা। বার্সার মাঝমাঠে ইনিয়েস্তার চেনা দাপটই প্রতিকূল পরিস্থিতিতে বার্সাকে অক্ষত রাখল। খেলা শেষের পর ইনিয়েস্তা বলেছেন,‘আরও একটা দুরন্ত মরশুম পার করে এলাম আমরা। তবে, এই ফাইনালটা বেশ মনে রাখার মতোই হল।’ নিজে গোল না করলেও, এদিনের ম্যাচে দুটি গোলের পেছনেই যাঁর অবদান, সেই মেসি নিজের ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আমরা প্রচণ্ড লড়াই করেছি। সমস্যাও পড়েছি। তবে শেষে, আমরাই জিতেছি। সবাই মিলে জিতেছি। শক্তিশালী দল হিসেবে খেলেছি। প্রথমে লা লিগা চ্যাম্পিয়ন। তারপর এই কাপ জয়!!!’ কোচ এনরিকে দলের লড়াই দেখে খুশি। বলেছেন,‘মরশুমের শেষটা দারুণভাবেই হল। এ মরশুমে বেশ কিছু সমস্যার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে আমাদের। তা সত্ত্বেও দল যেভাবে লড়াই করেছে, তা দুর্দান্ত। প্রশংসনীয়।’
No comments:
Post a Comment