সাউথ চায়না ৩ ( লাও চুং, রায়ান, মাহামা) মোহনবাগান ০
আগেই গ্রুপ শীর্ষে পৌঁছে যাওয়ায় এ এফ সি কাপে হংকংয়ের সাউথ চায়নার বিরুদ্ধে ম্যাচটা মোহনবাগানের কাছে ছিল নিয়মরক্ষার। ফলাফলের কোনও গুরুত্ব ছিল না। মোহনবাগান এ এফ সি কাপের প্রি–কোয়ার্টার ফাইনালে ট্যাম্পাইন রোভার্সের মুখোমুখি হবে গুয়াহাটির মাঠে, ২৪ মে। লাজংকে প্রথম দফার সেমিফাইনালে ৫–০ গোলে হারানোয় ফেডারেশন কাপ ফাইনালে বাগানের খেলা প্রায় নিশ্চিত।
লাজংয়ের বিরুদ্ধে ফিরতি সেমিফাইনাল শিলংয়ের মাঠে ১৪ মে, বিরাট কোনও অঘটন না ঘটলে সঞ্জয় সেনের দলের ২১ মে ফাইনাল খেলা আটকাবে না। ফেডারেশন কাপ ট্রফির দিকেই বেশি নজর, তাই চোট, ক্লান্তি এড়াতে নর্ডি, গ্লেন, প্রণয়, কিংশুক, প্রীতম, লুসিয়ানো, ধনচন্দ্র, গোলকিপার দেবজিতের মতো নিয়মিত আট ফুটবলারকে বাদ দিয়েই মূলত রিজার্ভ বেঞ্চের ফুটবলারদের রেখে দল সাজিয়েছিলেন কোচ সঞ্জয়। সেটাই বুমেরাং হল বাগানের। সাউথ চায়নার কাছে ০–৩ গোলে লজ্জার হার। বাগান ১১ পয়েন্টে শীর্ষেই থাকল, হংকংয়ের দলটি ৯ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ রানার্স হয়ে প্রি– কোয়ার্টার ফাইনালে খেলার সুযোগ পেল। রিজার্ভ বেঞ্চের ফুটবলাররা যে নর্ডি, গ্লেন, লুসিয়ানো, কিংশুক, প্রীতম বা গোলকিপার দেবজিৎদের বিকল্প নন, সেটা এদিন প্রমাণিত। হংকংয়ের মাঠে মোহনবাগান ৪–০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছিল সাউথ চায়নাকে। আর এদিন শুরু থেকে গুয়াহাটির মাঠে ফিরতি লড়াইয়ে সাউথ চায়নার আক্রমণের মুখে রীতিমতো হামাগুড়ি দিয়েছেন সঞ্জয়ের দ্বিতীয় সারির ফুটবলাররা। মাঝমাঠ ও রক্ষণ পুরোপুরি বদলে ফেললে যে হাঁড়ির হাল হয়, সেটা বোঝা গেছে। সুযোগ পান না বলে লালকমলের মতো ফুটবলাররা মাঠের বাইরে বসে ফোঁসেন। কিন্তু সুযোগ পেয়ে তো লবডঙ্কা। নর্ডি, গ্লেনরা না খেললে জেজে, সুভাষ, কাৎসুমির পক্ষেও যে কিছু করা সম্ভব নয়, সেটাও দেখা গেল। আক্রমণে ঝাঁঝ না থাকলে রক্ষণে চাপ সামলানোর ক্ষমতা রাজু, সঞ্জয় বালমুচুদের ছিল না। সাউথ চায়না দলের আক্রমণের ধাক্কায় তাই সহজেই নৌকাডুবি। বিরতির আগেই গুনে গুনে তিন গোল হজম। ১৯ মিনিটে মাহামা আওলের থেকে বল পেয়ে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন লাও হিউ চুং। ২৪ মিনিটে লাওয়ের কর্নারে চ্যাংয়ের হেড বক্সে পড়ার মুখে ২–০ করেন রায়ান গ্রিফিথস। ৩৩ মিনিটে ব্যবধান বাড়ান ক্যামেরুনের মাহামা। প্রথমার্ধের শেষমুহূর্তে কার্লোসের শট পোস্টে না লাগলে চার নম্বর গোলটাও পেয়ে যেত তারা। লুসিয়ানোকে দ্বিতীয়ার্ধে নামিয়ে রক্ষণের নড়বড়ে পরিস্থিতি কিছুটা সামাল দেন কোচ সঞ্জয়। বাগান কোচ এই গোল হজমকে গুরুত্ব না–ই দিতে পারেন। নিয়মরক্ষার ম্যাচে হারকেও। কিন্তু এটা তো ঠিক, বিদেশি দলের কাছে এমন অসহায় আত্মসমর্পণে বাগানের পাশাপাশি দেশেরও তো সম্মান নষ্ট। তাছাড়া দুরন্ত ছন্দে ছিল সবুজ–মেরুন ব্রিগেড। আই লিগের শেষ ম্যাচে বেঙ্গালুরু ও ফেডারেশন কাপে লাজংকে দিয়েছে ৫ গোল। এছাড়াও অন্যান্য ম্যাচে প্রতিপক্ষকে হেসেখেলে হারিয়েছে বড় ব্যবধানে। সেখানে সাউথ চায়নার কাছে এই বিশ্রী হারে পরবর্তী ম্যাচে বাগানের খেলায় প্রভাব ফেলবে কিনা, সেটা সময়ই বলবে। বেঙ্গালুরু এফ সি আই লিগ জেতার পর বাগানের বিরুদ্ধে রিজার্ভ বেঞ্চের ফুটবলারদের খেলাতে গিয়ে ডুবেছিল। ছন্দ হারিয়ে ফেডারেশন কাপ থেকেও ছিটকে যায় পরে। আশা করি, মোহনবাগানের তেমন হাল হবে না, সামলে নেবে।
মোহনবাগান: অর্ণব, অভিষেক (তীর্থঙ্কর), রাজু, সঞ্জয়, শৌভিক ঘোষ, কাৎসুমি (লুসিয়ানো), লালকমল, লেনি, কেন, জেজে (শৌভিক চক্রবর্তী) ও সুভাষ।
No comments:
Post a Comment