প্রবল গরম। কাঠফাটা রোদ। তবু অনুশীলনে কোনও খামতি নেই ইস্টবেঙ্গল কোচ মর্গানের। বিশ্বজিতের জায়গায় তাঁকে কোচ করেছেন কর্তারা সাফল্যের আশায়। কিন্তু লাজংয়ের বিরুদ্ধে আই লিগের শেষ ম্যাচে তাঁর কোচিংয়ে হোঁচট খেয়েছে দল। ফেডারেশন কাপের প্রথম ম্যাচে সেই লাজংয়ের বিরুদ্ধেই খেলতে হবে ইস্টবেঙ্গলকে।
হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে পর্বে আগে শিলংয়ের মাঠে ১ মে। পাহাড়ে লাজংয়ের বিরুদ্ধে তাঁর জমানায় ইস্টবেঙ্গলের রেকর্ড ভাল নয়, এটা জানেন মর্গান। তবে সেটা নিয়ে উদ্বিগ্ন নন সাহেব কোচ। তাঁর সাফ কথা, ‘আগে কী হয়েছে ভেবে তো লাভ নেই। রেকর্ড বদলানোর জন্যই খেলতে হবে। আই লিগের ম্যাচের সময় নিজে দল ইস্টবেঙ্গল ও লাজং দুটোই ছিল প্রায় অচেনা, অজানা। কিন্তু একবার দেখা হয়ে যাওয়ায় প্রতিপক্ষকে জানার সুযোগ মিলেছে। একইসঙ্গে নিজের দলের শক্তি–দুর্বলতাগুলো বোঝা গেছে। চাপ থাকবেই, ভাল খেলে সেটা কাটাতে হবে।’ লাজংয়ের মুখোমুখি হতে মর্গান শিলং যাবেন শুক্রবার। এখন যা পরিস্থিতি তাতে মেন্ডি, রবার্ট, লোবো, বিকাশ, রাহুলদের এবারও শিলংয়ে দলের সঙ্গে যাওয়ার সম্ভাবনা খুব কম। ইস্টবেঙ্গল কোচের জোর সেই রক্ষণ সংগঠনে। বলেই দিলেন, ‘আই লিগে দল ২২টা গোল করেছে যেমন, তেমন খেয়েছে ১৮টা। এটা ভাল নয়। আমার প্রথম লক্ষ্য, রক্ষণ জমাট করা। ফেডারেশন কাপটা জিতে ফেলা যায় মাত্র দু’গোল করে, অবশ্য যদি কোনও গোল না খায় টুর্নামেন্টে।’ তবে সেমিফাইনাল বা ডার্বির সম্ভাবনা নিয়ে একটি কথাও বলতে নারাজ মর্গান। বলেন, ‘আগে দল সেমিফাইনালে উঠুক, তারপর এসব নিয়ে ভাবব।’ এদিকে, ফেডারেশন কাপ জিতে আই লিগ না জেতার আক্ষেপ মেটাতে চান রন্টি। আই লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতা তিনি। এফ পি এ আইয়ের বিচারে সেরা বিদেশি ফুটবলারের পুরস্কার পেয়েছেন। কলকাতা ক্রীড়া সাংবাদিক ক্লাব তাঁকে ভারতীয় ফুটবলে অবদানের জন্য বিশেষ স্বীকৃতি দিয়েছে। রন্টির প্রতিক্রিয়া, ‘এসবই সম্ভব হয়েছে সকলের সহযোগিতা পাওয়ায়। তবে খুব আপশোস হচ্ছে, বারবার সুযোগ হাতে আসার পরও আই লিগটা না জেতায়। আমি অনেকগুলো রাত ঘুমোতে পারিনি। একা কিছু করা সম্ভব নয়। সকলে মিলে চেষ্টা করতে হবে ফেডারেশন কাপ জিতে সেই দুঃখ ভোলার।’ পরের মরশুমে কি ইস্টবেঙ্গলেই থাকবেন? রন্টির মতে, ‘পরিবেশটা হল আসল। ডেম্পোতে ভাল পরিবেশ ছিল বলেই দীর্ঘসময় ছিলাম। তবে ইস্টবেঙ্গলের খেলার ইচ্ছে বহুদিন ধরেই ছিল। একটা আলাদা প্যাশন আছে ইস্টবেঙ্গল নিয়ে। এই দলেই থাকতে চাই।’ তবে এর সঙ্গেই জল্পনা বেড়েছে রন্টির আরেকটি মন্তব্যে। হঠাৎই মোহনবাগানের তারকা ফুটবার সনি নর্ডির প্রশংসা শোনা যায় তঁার মুখে। এমনকী বলেও দেন, নর্ডির পাশে খেলারও ইচ্ছা রয়েছে তঁার। তবে যেহেতু রন্টি মোহনবাগান যেতে চান না, বা নর্ডিও ইস্টবেঙ্গলে আসতে চান না, তাই এটা যে আপাতত সম্ভব এটা এখনই ভাবা যাচ্ছে না। তবু রন্টি চান নর্ডি তঁার সঙ্গে জুটি বাঁধুন— এবং নর্ডিকে পাশে পেলে তিনি যে অনেক গোল করতে পারেন এটাও বলে রাখলেন। রন্টির পছন্দের সেরা বিদেশি ব্যারেটো, বেটো, নর্ডি, ওডাফা, চিড্ডি। ভারতীয় ফুটবলারদের এই মুহূর্তে রন্টির মতে সেরা জেজে। আর সেরা কোচ মনে করেন ওয়েস্টউডকে। ধারাবাহিকতা দেখানোর জন্য।
No comments:
Post a Comment