আইপিএলকে দ্বিতীয় সপ্তাহে পড়তে যেমন গতিশীল আর ছন্দময় দেখাচ্ছে, তেমনই এই মুহূর্তে সবচেয়ে ভাল টিম দেখাচ্ছে কলকাতাকে। খুব ভাল ব্যালান্সড, বেশ কিছু দিন হয়ে গেল খুব বেশি পরিবর্তন ঘটেনি টিমে, আর খেলছেও তেলখাওয়া মেশিনের মতো মসৃণ।


ওদের জন্য সবচেয়ে ভাল খবর— সুনীল নারিনের টুর্নামেন্টে ফেরা। কলকাতার সাফল্যের পিছনে নারিন একটা বড় ফ্যাক্টর। যদিও আমি মনে করি, নারিনকে এখনও বিপক্ষ টিম খেলছে পুরনো নারিন ভেবে। যদি ব্যাটসম্যানরা ওকে খোলা মনে খেলে, তখন আসল বোঝা যাবে, নারিন এখনও কতটা কার্যকর। বিপক্ষ টিমের ওর চার ওভার থেকে ২৫-৩০ রান টার্গেট করা দরকার, তা হলে সেটা শেষমেশ ৩৫-এ গিয়ে দাঁড়াতে পারে। কিন্তু কোনও দল যদি নারিনের চার ওভারে ৪০ বা তার বেশি টার্গেট করে সেক্ষেত্রে সেটা অহেতুক সমস্যাকে ডেকে আনা হবে।
মুম্বই গত বারের মতোই রোলার-কোস্টারে যেন চেপে রয়েছে! একটা জিতছে তো পরেরটা হারছে। ওদের দলটা ভাল কিন্তু থিতু হওয়া দরকার। টুর্নামেন্টের সবে প্রথমার্ধ চলছে, তাই যত তাড়াতাড়ি ওরা থিতু হতে পারে ততই সেটা ওদের জন্য মঙ্গল।
দিল্লি বেশ নজর কাড়ছে। আমার মতে টি-টোয়েন্টি এমন একটা ফর্ম্যাট যেখানে মাঠে তরুণ ক্রিকেটারদের স্বাধীনতা দিলে তারা সফল হবেই। আর যদি কোনও দলে তারুণ্য এবং অভিজ্ঞতার সঠিক মিশেল থাকে, সেই দল ভাল খেলবেই। দিল্লি টিমে সেই মিশেলটা আছে এবং আমি এই দলটাকে খুব মন দিয়ে নজরে রাখছি।
বেঙ্গালুরু আবার আমার মতে পাওয়ার-হাউস টিম। গেইল, ডে’ভিলিয়ার্স, ওয়াটসন ও সর্বোপরি বিরাট কোহালি। ওরা হয়তো একটা-দু’টো ম্যাচ হারতে-টারতে পারে, কিন্তু সব মিলিয়ে ওদের ভাল করাই উচিত। তবে হ্যাঁ, ওদের বোলিং বিভাগের দরকার উঠে দাঁড়ানো, আর একবার সেটা হলে আরসিবিকে আরও বেশি পূর্ণাঙ্গ টিম দেখাবে।
তবে যে দলটা আমাকে অবাক করে চলেছে তার নাম কিংগস ইলেভেন পঞ্জাব। কী সব প্রতিভাবান ক্রিকেটার ওদের দলে! কিন্তু তাতেও ওদের ক্লিক করতে না দেখে আমি অবাক। গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে ওদের টিমের কারও উচিত আলাদা করে নিয়ে বসে বোঝানো যে, তোমার যা প্রতিভা তাতে তোমার উচিত ঠান্ডা মাথায় ক্রিজে গিয়ে নিজের স্বাভাবিক ব্যাটিংটা করা। স্বাভাবিক ক্রিকেটিং শটগুলো মারা। আর সেটা করলে ম্যাক্সওয়েল ১৪০ স্ট্রাইক রেটে রান তুলবে। কিন্তু ও করছে কী, দু’শো স্ট্রাইক রেটে রান করতে গিয়ে এমন সব শট খেলছে যার কোনও মানে নেই। যে ব্যাটিং-ভাবনা ওর দলের আদৌ সাহায্যে লাগছে না।
ম্যাক্সওয়েলের মাথায় কারও ঢোকানো দরকার, অফ স্পিনারের যে বলটা ওর ভেতরে আসছে তাতে রিভার্স সুইপ মারতে যাওয়াটা বিরাট ঝুঁকি। আদৌ কোনও কাজের শট নয়। 
সোর্স - আনন্দবাজার