Blogger Tips and TricksLatest Tips And TricksBlogger Tricks

Monday, April 18, 2016

এঙ্গেলের অ্যাকাডেমিতে প্রস্তুতি মৌমার

দু’দশকের কেরিয়ারে অনেক শৃঙ্গে উঠেছেন। সাফল্যের শৃঙ্গ। আবার খাদের মুখেও পড়েছেন। মনে হয়েছে আর হয়তো পারবেন না এগোতে। এখানেই চূড়ান্ত পতন। কখনও সেই খাদের কখনও নাম ফর্ম, কখনও ফিটনেস, কখনও মোটিভেশন। কিন্তু খাদগুলো যতই গভীর হোক, হার মানেননি। বারবার ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। মাথায় তখন একটাই মন্ত্র ঘুরপাক খেয়েছে— খেলাটাকে শুধু ভালবেসে, আঁকড়ে ধরে আরও যত দূর এগোনো যায়, যাব।



তিনি মৌমা দাসের সামনে আপাতত অবশ্য খাদ নয়, বরং আর একটা শৃঙ্গ— রিও অলিম্পিক্স।
এক যুগ আগে যখন প্রথম বার অলিম্পিক্স কোয়ালিফাই করেছিলেন, সেই ২০০৪ আথেন্সে ভাবতেন অলিম্পিক্সে নামাটাই বিরাট ব্যাপার। বুঝতেই পারেননি মহাগেমসের গুরুত্ব। এতটাই জুনিয়র ছিলেন।  এ বার দ্বিতীয় সুযোগে রিও অলিম্পিক্সে আর সেই ভুল হওয়ার সুযোগ নেই। উঠে-পড়ে লেগে গিয়েছেন চূড়ান্ত প্রস্তুতিতে।
কী সেই রোডম্যাপ? সোমবার  ফোনে মৌমা বললেন, ‘‘ক’দিন ব্রেক নেওয়ার পরে বুঝতে পারব আমাদের অলিম্পিক্স টেবল টেনিস দলের জন্য কী রকম ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করছে ফেডারেশন। তবে যেখানেই যাই আমরা চার কোয়ালিফায়ার একসঙ্গে যাব। এখনও জানতে পারিনি শিডিউলটা কেমন। টিটিএফআই সব ঠিক করার পর ব্যাপারটা পরিষ্কার হবে।’’ তবে ব্যক্তিগত ভাবে মৌমার ট্রেনিং শি়ডিউলের গতিপথ ঠিক হয়ে গিয়েছে।
জার্মানিতে প্রাক্তন ভারতীয় কোচ, বর্তমানে সেই দেশের জাতীয় টিটি কোচ পিটার এঙ্গেলের অ্যাকাডেমিতে মাসখানেক প্রস্তুতি নিতে চান মৌমা। প্রাথমিক কথাবার্তাও সারা। কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রক, জাতীয় টিটি সংস্থার সঙ্গে কথা বলার পর সব চূড়ান্ত করবেন। কিন্তু এঙ্গেল-ই কেন? মৌমা বললেন, ‘‘পিটার স্যার আমাকে বছর তিনেক আগে প্রচুর সাহায্য করেছিলেন। তখন আমার ফর্ম ভাল যাচ্ছিল না। বেশির ভাগ ম্যাচ হারছিলাম। র‌্যাঙ্কিংয়ে পিছিয়ে পড়ছিলাম। পিটার স্যার আমার খেলা দেখে বার করেছিলেন কেন আমি মোটিভেশন হারাচ্ছিলাম। বলেছিলেন, তুমি হয়তো বয়সের কথা ভাবছ। কিন্তু জার্মানিতে ৪০-৪৫ বছর বয়সে, দুই বাচ্চার মাদেরও চুটিয়ে টিটি খেলার উদাহরণ আছে।’’
সেই সময় পিটার এঙ্গেলের কথায় এতটাই অনুপ্রাণিত হন মৌমা যে, তাঁর কেরিয়ারের সফল দ্বিতীয় ইনিংসের শুরু তার পর থেকেই। এঙ্গেলের ট্রেনিংও মৌমার দারুণ পছন্দের। ‘‘এ বার ফ্রাঙ্কফুর্টে পিটার স্যারের কাছে ট্রেনিং করার পরেই বুঝতে পারব ফিটনেস আর ফর্মের দিক থেকে ঠিক কেমন জায়গায় আছি। রিওতে কেমন থাকব।’’ তা ছাড়া এখন যে নতুন প্লাস্টিক বলে (পলি বল) খেলা হয় সেটার সঙ্গে মানাতে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে মৌমার। এঙ্গেলের কাছে সেই টেকনিক্যাল মেরামতিও সেরে ফেলতে চান দ্রুত।
দু’দশকে দেশ-বিদেশের টুর্নামেন্টে সোনা জেতার সেঞ্চুরি করে ফেলা মৌমার আরও একটা বড় ভরসা তাঁর পরিবার, বাবা-মা, বিশেষ করে স্বামী কাঞ্চন চক্রবর্তীর সমর্থন। বলছিলেন, ‘‘হংকংয়ে যে দিন বিকেলে আসল ম্যাচটা ছিল টেনশনে ঘুম আসছিল না। ওকে ফোন করে বলছিলাম, আমার রিও যাওয়া হবে না। যে কোনও টিটি প্লেয়ারেরই তো অলিম্পিক্সের স্বপ্ন থাকে। এ বার অন্য কেউ সুযোগটা পাক। কিন্তু ও সাহস জুগিয়ে গিয়েছে। বলেছে চেষ্টা করে তো দেখো। এই ভরসাটাই কিন্তু সব।’’ রিওতে টার্গেট কী? ‘‘এটাই হয়তো অলিম্পিক্সে আমার শেষ সুযোগ, আগ বাড়িয়ে কিছু বলে তো লাভ নেই, তবে এটুকু বলতে পারি টিটি আমার প্রাণ, দেশের হয়ে নামার চেয়ে বড় গর্ব কিছু নেই। তাই রিওতে শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত লড়ব।’’

No comments:

Post a Comment