হোটেল হাইওয়ে প্যালেসে বৃহস্পতিবার সন্ধেয় পৌঁছে দেখা গেল সামনে খুলে রাখা ল্যাপটপে তঁার চোখ। হাতের আঙুল কি–বোর্ডে। মনোযোগ সহকারে কী যেন করছেন। বোঝাই গেল, বাগান বধের নীল–নকশা তৈরিতে ব্যস্ত। তিনি আইজল এফ সি–র কোচ জহর দাস।
শনিবার ফেডারেশন কাপ ফাইনালে যে দলের বিরুদ্ধে তিনি ডাগআউটে থাকবেন, সেই মোহনবাগানের ঘরের ছেলে অনায়াসে বলা যায় তঁাকে। ফুটবলার হিসেবে ৭৫–৭৬ সালে বাগানে খেলেছেন। ২০০৬ সালে খুব অল্প সময়ের মেয়াদে সিনিয়র দলের কোচ ছিলেন। তার আগে ১৯৯১–তে সুভাষ ভৌমিকের সঙ্গে সহকারী হিসেবেও কাজ করেছেন। জহর নিজে ও তঁার মেয়ে বাগানের সদস্য। ফেড কাপ জিততে বাগানের সনি, জেজেদের সামনে শেষ কঁাটা বলতে সেই জহর–ই। তবে, ফাইনাল যুদ্ধের আগে জহর ‘প্যাশন’ আর ‘প্রফেশন’ মেলাতে চান না। ল্যাপটপের দিকে তাকিয়েই জহরের মন্তব্য, ‘মোহনবাগান হারলে খারাপ লাগবে অবশ্যই। তবে মাঠের নব্বই মিনিট ওরা আমার শত্রুপক্ষ। তখন এক ইঞ্চি ছেড়ে কথা বলব না।’মোহনবাগানের ইয়ুথ ডেভলপমেন্টে হেড কোচ ছিলেন। সেখান থেকে হঠাৎ–ই পাহাড়ের টিম আইজল এফ সি–র জুনিয়র টিমের কোচিংয়ের দায়িত্বের সুযোগ আসে। পরিবার ছেড়ে পাহাড়ে গিয়ে কাটাতে জহরের কোনও সমস্যা হয় না। পাহাড়ি পরিবেশে দিব্যি মানিয়ে নিয়েছেন। কারণ হিসেবে জহর বলছেন, ‘কোচিং করানো আমার প্যাশন। যে কোনও পরিবেশ, পরিস্থিতিতেই মানিয়ে নিই। আইজল কর্তারা আমাকে যা সুযোগ–সুবিধে দিয়েছেন তার তারিফ করতেই হবে।’ জুনিয়র টিম নিয়ে জহরের কাজ দেখে মুগ্ধ হয়ে যান আইজল কর্তারা। স্প্যানিশ কোচকে সরিয়ে সিনিয়র দলের দায়িত্ব আসেন এই বঙ্গসন্তান কোচ। আই লিগে অবনমন আটকাতে না পারলেও ফেড কাপে আই লিগ চ্যাম্পিয়ন সুনীল ছেত্রির বেঙ্গালুরু এফ সি–কে দু–দু’বার পর্যদুস্ত করেছে হাওড়ার জহরের টিম। কলকাতায় হালে পানি না পেয়ে পাহাড়ে গিয়ে অনামী টিমকে ফেডারেশন কাপের ফাইনালে তুলেছেন। সামনে সেই মোহনবাগান। আই লিগে সেই দলের মুখের গ্রাস কেড়ে নিলেও শনিবারের ম্যাচে কঠিন লড়াই হবে, মানছেন জহর। বলছেন, ‘আই লিগে সঞ্জয় আমাদের টিম হিসেবে ধরেনি, আর ফেড কাপের আগে আমাদের নিয়ে ওরা এতটাই সতর্ক যে, গুয়াহাটি আসার দিনও প্র্যাকটিস করে আসতে হচ্ছে।’ জহর আর মোহনবাগান— ফাইনালের আগে দু–পক্ষই একে অপরকে নিয়ে সতর্ক, রয়েছে সমীহ।
No comments:
Post a Comment