তিনি ভারতের অন্যতম ধনী ক্রীড়াবিদ। অথচ ছোটবেলায় ক্রিকেট খেলে বেড়ে ওঠার
সময় এমন দিনও গেছে, যেদিন ক্যাব ভাড়া করে রেল স্টেশন থেকে বাড়ি যাবেন তার
পয়সাটুকুও পকেটে ছিল না! তিনি শচীন তেন্ডুলকার। এ কথা মঙ্গলবার এক
অনুষ্ঠানে নিজেই জানিয়েছেন ক্রিকেট কিংবদন্তি। একটি অনূর্ধ্ব ১৫
প্রতিযোগিতায় খেলে পুনে থেকে ফিরছিলেন শচীন। তখন তাঁর বয়স ১২ বছর। কী
ঘটেছিল?
শোনা যাক শচীনের মুখেই, ‘মনে আছে, মাত্র ৪ রান করেই ফিরেছিলাম।
রান আউট হয়ে। এতটাই হতাশ হয়ে পড়েছিলাম যে, ড্রেসিংরুমে গিয়ে কেঁদেছিলাম।
পরে আর ব্যাট করার সুযোগও পাইনি। কারণ বৃষ্টি হচ্ছিল। বাইরে যাওয়া, সিনেমা
দেখা, খাওয়া, এ ছাড়া সারাদিন ধরে আর কিছু করারও ছিল না। আমার কাছে যে টাকা
ছিল, তা কীভাবে খরচা করতে হবে বা কতটা বাঁচিয়ে রাখতে হবে, তার কোনও ধারণাও
ছিল না। সবই খরচা করে ফেলেছিলাম। যখন ট্রেনে মুম্বই ফিরলাম, তখন একটা পয়সাও
ছিল না পকেটে। কাঁধে তখন বড় বড় দুটো ব্যাগ। দাদার স্টেশনে নেমে হাঁটতে
হাঁটতে গেলাম শিবাজি পার্কে।’ তখন মোবাইল আসেনি। যোগাযোগ–প্রযুক্তিতে
আসেনি বিপ্লব। তাই তো শচীন বলেছেন, ‘ভেবে দেখুন তো, আমার হাতে যদি একটা
ফোন থাকত, সেক্ষেত্রে এস এম এস করলেই হয় বাবা, নয়ত দাদা ফোনে টাকা পাঠিয়ে
দিতেন। তখন ক্যাব ভাড়া করতেও সমস্যা হত না।’ এদিন ডি বি এসের উদ্যোগে
‘ডিজিব্যাঙ্ক’–এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ছিলেন মাস্টার ব্লাস্টার।
প্রযু্ক্তির ব্যবহার যে ক্রমশই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে, তা বলতে গিয়ে শচীন
টেনে আনেন ১৯৯২–তে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে ডারবান টেস্টে তাঁর রান আউটের
প্রসঙ্গ। তিনিই হলেন সেই ক্রিকেটার, যিনি তৃতীয় আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে
প্রথম রান আউট হয়েছিলেন। শচীনের তাই হালকা রসিকতা, ‘সব সময় অবশ্য টেকনোলজি
আপনার রাস্তায় হাঁটে না। ফিল্ডিং করার সময় আপনার প্রয়োজন তৃতীয় আম্পায়ারের
সঠিক সিদ্ধান্ত। কিন্তু ব্যাটিংয়ের সময় নয়।’ পরে শচীনই জানান, ২০০২–০৩–এ
প্রথম শুনেছিলেন, ড্রেসিংরুমে থাকবে কম্পিউটার। ‘ড্রেসিংরুমে কম্পিউটারের
কাজ কী? কীভাবে ব্যাট করতে হবে, সেটা তো আর কম্পিউটার শিখিয়ে দেবে না। তা
হলে? কিছু সময়ের পর বুঝতে পারলাম, পরিকল্পনা এবং তার রূপায়ণ শুধু কল্পনার
ওপর ছেড়ে দেওয়া যায় না। তাই লাগানো হয়েছিল প্রোজেক্টর মেশিন, যেখানে
বিভিন্ন তথ্য ভেসে উঠত।’
No comments:
Post a Comment