বোর্ডের ধ্বংস হওয়া দেখতে পারব না, বললেন মনোহর
তাঁর ব্যাটন অনুরাগ ঠাকুরের হাতে ওঠা নিশ্চিত হওয়ার দিন আইসিসি চেয়ারম্যান শশাঙ্ক মনোহরের চাঞ্চল্যকর স্বীকারোক্তি, বিচারপতি লোঢা কমিটির সমস্ত সুপারিশ কার্যকর করা তাঁর কম্মো নয়। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সর্বোচ্চ পদ ছাড়ার পর তাঁর স্পষ্ট ইঙ্গিত, লোঢা কমিশনের সুপারিশ কার্যকর হলে ধ্বংসের পথে চলে যেতে পারে বিসিসিআই। বিশ্বের অন্যতম ধনী ক্রিকেট সংস্থা হয়তো ফিরে যাবে আশির দশকে।
শনিবার তাঁর এই বেনজির স্বীকারোক্তির পর অনুরাগ ঠাকুর বোর্ডের নতুন প্রেসিডেন্ট পদের জন্য মনোনয়ন পেশ করেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে। রবিবার বোর্ডের বিশেষ সভায় অনুরাগ ঠাকুরের সর্বকনিষ্ঠ বোর্ড প্রেসিডেন্ট হওয়ার সিদ্ধান্তে সিলমোহর পড়বে মাত্র। কিন্তু মনোহর এ দিন যা বলেছেন, তাতে স্পষ্ট ইঙ্গিত, নতুন বিসিসিআই প্রেসিডেন্টের জন্য কাঁটায় ভরা রাস্তা অপেক্ষা করছে।
মনোহর এ দিন বলেন, ‘‘বোর্ডে আমার চেয়ে নিশ্চয়ই আরও যোগ্য লোক রয়েছেন। আশা করি তাঁরা এই সুপারিশগুলো কার্যকর করে দেখাবেন। আমার পক্ষে তা সম্ভব নয়। এত মানুষের তৈরি করা একটা সংস্থাকে ধ্বংস হতে দেখতে পারব না।’’ তাঁর বক্তব্য, লোঢা কমিটির ৭৫ শতাংশ সুপারিশই বোর্ড কার্যকর করেছে। কিন্তু বাকি ২৫ শতাংশ সুপারিশ কার্যকর হলে ব্যাপক ক্ষতি হবে বোর্ডের।
এ দিন অনুরাগের মনোনয়নপত্রে যেখানে পূর্বাঞ্চলের কোনও এক সংস্থার সমর্থনই যথেষ্ট ছিল, সেখানে ছ’টি সংস্থাই সমর্থন জানিয়ে মনোনয়নপত্রে সই করে দেয়। মনোনয়ন পেশের সময় অনুরাগের পাশে ছিলেন সিএবি প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ও সম্ভাব্য সচিব অজয় শিরকে।
মনোহরের বক্তব্য অনুযায়ী, লোঢা কমিশনের সুপারিশে যে ক’টি বিষয় কার্যকর করা কঠিন হবে, সেগুলি হল, ১) টিভিতে ম্যাচের মাঝে বিজ্ঞাপন না দেখানো, ২) এক রাজ্য এক ভোট, ৩) আইপিএল কাউন্সিলে ফ্র্যাঞ্চাইজি প্রতিনিধিদের রাখা, ৪) ওয়ার্কিং কমিটিতে খেলোয়াড়দের রাখা, ৫) নির্বাচন কমিটিতে সদস্য সংখ্যা পাঁচ থেকে তিনে নামিয়ে আনা। তিনি বলেন, ‘‘এই সুপারিশগুলো বাদে সব ঠিক আছে। সেগুলো কার্যকর করাও হচ্ছে। কিন্তু কতগুলো সুপারিশ অবাস্তব। এগুলো সুপারিশ করার আগে বোর্ডকে একবার জানানো উচিত ছিল। এটাই স্বাভাবিক ন্যায়বিচারের নীতি। কিন্তু তা করা হয়নি।’’
টিভিতে বিজ্ঞাপন দেখানোর উপর বিধিনিষেধ নিয়ে মনোহর বলেন, ‘‘বিজ্ঞাপন দেখানো বন্ধ হয়ে গেলে বোর্ডের আয় দু’হাজার কোটি থেকে চারশো কোটিতে নেমে আসবে। স্টার স্পোর্টস জানিয়ে দিয়েছে, বিজ্ঞাপন ছাড়া তাদের পক্ষে ম্যাচ প্রতি ৪৩ কোটি দেওয়া সম্ভব নয়। বোর্ড ফিরে যাবে সেই আশির দশকে। অবসরপ্রাপ্ত ক্রিকেটারদের পেনশন, সারা বছরে ৯০০ থেকে ১০০০ জুনিয়র স্তরের ম্যাচ সব বন্ধ করে দিতে হবে।’’
No comments:
Post a Comment