আজকালের প্রতিবেদন: ট্যাম্পাইন রোভার্সের কাছে হারের ফলে এ এফ সি কাপ থেকে এবারের মতো বিদায় ফেড কাপ চ্যাম্পিয়নদের। সনি, কাৎসুমি না থাকায় মোহনবাগান যে এই ম্যাচে ভুগল, সেটা মেনে নিচ্ছে বাংলার ফুটবল মহল। তবে বাগান শিবির এ এফ সি–র এই ম্যাচকে গুরুত্ব দেয়নি এই তত্ত্ব মানতে নারাজ প্রাক্তনরা। তঁাদের যুক্তি, যদি গুরুত্ব না–ই দিত, তাহলে ১২০ মিনিট কেন লড়াই করল।
পি কে ব্যানার্জি: একটা সেট দলে সনি, কাৎসুমির মতো গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলার না থাকাটা অবশ্যই বড় ধাক্কা। তবে মোহনবাগান এ এফ সি কাপের এই ম্যাচকে গুরুত্ব দেয়নি বলে হেরেছে, একথা বিশ্বাস করি না। কোনও ফুটবলার বা কোনও ক্লাব ম্যাচ হারতে চায়, আমি অন্তত কোনওদিন দেখিনি। ইচ্ছে করে ম্যাচ হারতে চাওয়া তো একজন খেলোয়াড়ের কাছে আত্মহত্যার সমান।
চুনী গোস্বামী: এ এফ সি কাপের এই ম্যাচটায় তো অর্ধেক মোহনবাগান দল খেলেছে। তাই ম্যাচের ফলাফলে আমি অন্তত অবাক হইনি। আসলে এই ম্যাচের দলটা নামেই মোহনবাগান ছিল, কাজে ছিল না। অবশ্যই সনি, কাৎসুমি বা প্রথম একাদশের ফুটবলাররা থাকলে হয়ত ম্যাচটা জিতেও যেতে পারত। তবে হেরে যেতে চেয়েছিল কিনা সেটা বলতে পারব না।
শ্যাম থাপা: গোল করার ক্ষেত্রে এই মোহনবাগান দলটা অনেকটাই সনি, কাৎসুমির ওপর নির্ভরশীল। ফলে ওদের না থাকাটা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দঁাড়াল। ১২০ মিনিট লড়াইয়ের পর গোলের ব্যবধানটা ২–১। প্রথম একাদশের অনেক ফুটবলারকে এ এফ সি–র এই ম্যাচে পায়নি সঞ্জয় সেন। ফলে বোঝাই যাচ্ছে সনিরা থাকলে হয়ত ম্যাচের ফলাফল অন্যরকম হলেও হতে পারত। তবে ওরা এই ম্যাচকে গুরুত্ব দেয়নি এমনটা আমি বিশ্বাস করি না।
গৌতম সরকার: সনি, কাৎসুমির না থাকাটা মোহনবাগানের কাছে স্বাভাবিকভাবেই বড় ধাক্কা। আমি তো মনে করি এই দলটায় গোল করার ক্ষেত্রে সনি একাই একশো। তাপ ওপর ফেডারেশন কাপ জেতার হ্যাংওভার কাটতে না কাটতেই আরেকটা টুর্নামেন্টে নেমে পড়া। কাজটা কিন্তু মোটেও সহজ নয়। তবে মোহনবাগান এই ম্যাচকে কম গুরুত্ব দিয়েছিল বলে যে কথা উঠছে, সেটা ভিত্তিহীন। একদম বাজে কথা। কোনও দল ম্যাচ হারতে মাঠে নামে না। আর এ এফ সি ম্যাচের কি গুরুত্ব কম?
প্রসূন ব্যানার্জি: দলের সেরা খেলোয়াড়রা না থাকলে সেটা বাকিদের পারফরমেন্সে প্রভাব ফেলতে বাধ্য। ফুটবলার জীবনে এরকম বহু ঘটনার সাক্ষী থেকেছি। তাই মনে করি সনি, কাৎসুমি না থাকাটা বাকি ফুটবলারদের কাছে বড় ধাক্কা হয়ে দঁাড়িয়েছিল। তার ওপর এই ট্যাম্পাইন রোভার্স কিন্তু গতবারের তুলনায় অনেক পরিণত ফুটবল খেলেছে। তবুও মোহনবাগানের এই লড়াই প্রশংসনীয়। মাঠে একটা দলের ১২০ মিনিট লড়াই দেখে কী করে বলি তারা ম্যাচকে গুরুত্ব দেয়নি।
মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য: ফেডারেশন কাপ শেষ হতে না হতেই এ এফ সি কাপের ম্যাচে। এক্ষেত্রে ক্লান্তি বড় প্রভাব ফেলেছে। ফুটবলারদের দেখেই বোঝা যাচ্ছিল ওরা ক্লান্ত। অবশ্যই সনি, কাটসুমির না থাকাটা ভুগিয়েছে। একটা দলের দুই প্রধান ফুটবলার যদি মাঠে না থাকে তাহলে সেই প্রভাব খেলায় পড়তে বাধ্য। প্রথম গোলটা জঘন্যভাবে হজম না করলে ফলাফল অন্যরকম হতেও পারত। মোহনবাগান এই ম্যাচকে গুরুত্ব দেয়নি, এই তত্ত্বে বিশ্বাসী নই। গুরুত্ব না দিলে মাঠে ১২০ মিনিট লড়াই করত না।
শিবাজি ব্যানার্জি: একটা সেট টিম ভেঙে গেলে যে সমস্যা হয়, মোহনবাগানের সেটাই হয়েছে। সনি, কাৎসুমি, প্রীতমদের অনুপস্থিতিতেও রিজার্ভ বেঞ্চের ফুটবলাররা ১২০ মিনিট লড়াই করল। সেটা প্রশংসনীয়। তবে গ্লেন পুরোটা সময় থাকলে বা জেজে একটু ঠিকঠাক বলের সাপ্লাই পেলে ম্যাচটায় হয়ত অন্য ফল হত। তার ওপর ফেড কাপ খেলার ক্লান্তি তো রয়েইছে। তবে মোহনবাগান এই ম্যাচ গুরুত্ব দেয়নি, আমি বিশ্বাস করি না।
মানস ভট্টাচার্য: এই ট্যাম্পাইন রোভার্স দলটা অনেক উন্নতি করেছে। তবুও বলছি, মোহনবাগান পূর্ণশক্তির দল থাকলে এই ম্যাচে অন্য লড়াই হত। কম গুরুত্ব দিয়েছে বলে যে কথা উঠছে, সেটা সত্যি হলে আমি তাতে অন্যায়ের কিছু দেখছি না। এ এফ সি কাপের একটা ম্যাচ করতে এ এফ সি বা ফেডারেশন যদি দায়সারা মনোভাব দেখায়, সেখানে একটা ক্লাব গুরুত্ব না দিলে দোষের কি আছে?
বিদেশ বসু: গুরুত্বহীন একটা ম্যাচ কোনওদিন কোনও দল ১২০ মিনিট লড়াই করে? ফলে মোহনবাগান কম গুরুত্ব দিয়েছে এই তত্ত্ব আমি মানি না। তবে এটা ঠিক, সনি, কাৎসুমিদের অভাব অনেকটাই ভুগিয়েছে সঞ্জয়ের দলকে।
No comments:
Post a Comment