সুদূর হল্যান্ডে বসে সুরেশ রায়না বাবা হওয়ার আনন্দে আত্মহারা। আর ভারতে তখন শ্রেয়াংশীর (রায়না–কন্যা) দুই কাকু, বিরাট কোহলি এবং এ বি ডি’ভিলিয়ার্স তার বাবার দলের হাসি কেড়ে নিলেন হাসতে হাসতে!
আচ্ছা, এত মার মারা যায় বোলারদের? চোখে না দেখলে বিশ্বাসই করা যেত না! নজিরের পর নজির। রেকর্ডের পর রেকর্ড। শনিবার বিকেলে বেঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামীতে কোহলি–ডি’ভিলিয়ার্স যুগলবন্দীতে যে রানের সুনামি উঠল, তাতে দর্শকরা ভেসে গেলেও পরিসংখ্যানবিদদের ব্যস্ততা ছিল তুঙ্গে! ওই দু’জনকে নিয়ে সবারই এক রা, ‘বাপরে কী ডানপিটে ছেলে!’
আচ্ছা, এত মার মারা যায় বোলারদের? চোখে না দেখলে বিশ্বাসই করা যেত না! নজিরের পর নজির। রেকর্ডের পর রেকর্ড। শনিবার বিকেলে বেঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামীতে কোহলি–ডি’ভিলিয়ার্স যুগলবন্দীতে যে রানের সুনামি উঠল, তাতে দর্শকরা ভেসে গেলেও পরিসংখ্যানবিদদের ব্যস্ততা ছিল তুঙ্গে! ওই দু’জনকে নিয়ে সবারই এক রা, ‘বাপরে কী ডানপিটে ছেলে!’
একপেশে বললে ভুল, চূড়ান্ত একপেশে ম্যাচ। টস হেরে আগে ব্যাট করে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বাঙ্গালোরের রান ২৪৮/৩। গেইল ৬। যেন তাঁর আউটের অপেক্ষাতেই ছিলেন ডি’ভিলিয়ার্স! নামলেন, কোহলিকে নিয়ে রানের বন্যা বইয়ে দিলেন, চিন্নাস্বামীকে হিস্টিরিয়ায় আক্রান্ত করলেন! ৫২ বলে অপরাজিত ১২৯! ১০টি চার, ১২টি ছয়! শতরান এল ৪৩ বলে। কোহলির ব্যাটেও আগুন! ৫৫ বলে ১০৯। ৫টি চার, ৮টি ছয়। তিন অঙ্কে পৌঁছলেন ৫৩ বলে। দ্বিতীয় উইকেটে ২২৯ রান তুললেন মাত্র ৯৬ বলে! আই পি এল তো বটেই, টোয়েন্টি ২০ ক্রিকেটেও ২২৯ রানের জুটি সর্বোচ্চ। আসলে বরাবরই এই দুই ব্যাটের মধ্যে রসায়নটা আলাদা। এর আগের সর্বোচ্চ রানের জুটিও ছিল কোহলি–ডি’ভিলিয়ার্সের। গত আই পি এলেই মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে ২১৫ তুলেছিলেন তাঁরা। টোয়েন্টি ২০–তে একই ইনিংেস দুই শতরানের নজির আগে ছিল ২০১১–তে গ্লস্টারশায়ারের হয়ে কেভিন ও’ব্রায়েন (১১৯) ও হ্যামিশ মার্শালের (১০২), মিডলসেক্সের বিরুদ্ধে। এত রান খেয়ে (!) আর যেন ওঠার ক্ষমতা ছিল না গুজরাট লায়ন্সের ক্রিকেটারদের। মার খেয়ে খেয়ে ‘সিংহ’দের জিভ বেরিয়ে গিয়েছিল যে! এর পর কখন যে ম্যাচ শেষ হয়, তার প্রতীক্ষা! ১৮.৪ ওভারে ১০৪ রানে শেষ তারা। আই পি এলের ইতিহাসে সবথেকে বড় জয় পেল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স, ১৪৪ রানে। ক্রিস জর্ডন ৪টি, যজুবেন্দ্র চাহাল ৩টি, শচীন বেবি ২টি উইকেট নেন।
ম্যাচের পর তিনি হাসবেন না তো কে হাসবেন? রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স অধিনায়ক কোহলি বললেন, ‘আজকে তো আমি–ই হাসব। টস ছাড়া সব কিছুই পরিকল্পনামাফিক হল। প্লে–অফের ম্যাচ হিসেবেই দেখেছি ম্যাচটাকে। নিজেদের চাপে ফেলতে চাইনি। আমরা স্মার্ট ক্রিকেট খেলেছি।’ আর তিনি? ম্যাচের সেরা হয়ে ডি’ভিলিয়ার্স বললেন, ‘উইকেটে যখন গিয়েছিলাম, কোনও চিন্তা ছিল না। উইকেট হারানোর ভয় ছিল না। বিরাটের সঙ্গে অনেক ভাল সিদ্ধান্ত নিয়েছি, শেষপর্যন্ত দলের রানকে ভাল জায়গায় নিয়ে যেতে পেরেছি। টোয়েন্টি ২০–তে ডট বলকে ঘৃণা করি। আজ জাড্ডুর (জাদেজা) বোলিংয়ে সেটাই হয়েছে (৯টি ডট বল)। ও ভাল বল করছিল। ওই সময় সত্যিই রেগে যাচ্ছিলাম!’
দিনের শেষে প্রোটিয়া তৃপ্ত। তৃপ্ত ‘ক্যাপ্টেন হট’ও। ড্রেসিংরুমে ফিরে জেতার আনন্দের মাঝেই হল্যান্ড থেকে এল শ্রেয়াংশীর বাবার টুইটবার্তা, ‘ডি’ভিলিয়ার্স এবং কোহলি, তোমাদের অভিনন্দন। দারুণ খেলেছ তোমরা!!’
সংক্ষিপ্ত স্কোর: রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স: ২৪৮/৩ (কোহলি ১০৯, ডি’ভিলিয়ার্স অপরাজিত ১২৯)। গুজরাট লায়ন্স: ১০৪ (ফিঞ্চ ৩৭, জর্ডন ৪/১১)। ম্যান অফ দ্য ম্যাচ: ডি’ভিলিয়ার্স।
No comments:
Post a Comment