মোহনবাগান–৪ (কাৎসুমি, সনি ২, জেজে) সালগাঁওকার–০
সৌমিত্র কুমার রায়: এক্সপ্রেসের দৌড় আর বোমার বিস্ফোরণ,
তাতেই উড়ে গেল সালগাঁওকার। ‘হাইতিয়ান এক্সপ্রেস’ সনি নর্ডি ও ‘জাপানি বোমা’
কাৎসুিম উসা— বাগানের এই জোড়া ফলায় ভর করে বৃহস্পতিবার সালগাঁওকারকে ৪–০
হারিয়ে ফেড কাপের শেষ চারের টিকিট নিশ্চিত করে ফেলল মোহনবাগান।
গোল করে গ্যালারির দিকে এগিয়ে গিয়ে হাত তুলে কী দেখাচ্ছিলেন সনি। দ্বিতীয়ার্ধেও একই রকম ছবি। দু’হাত ডানার মতো মেলে ছুটে এলেন গ্যালারির দিকে। যেন বলতে চাইছিলেন, আমি থাকতে জয় নিয়ে চিন্তার কিছু নেই।
তিনি সনি নর্ডি। বাগান জনতার মনে সবুজ তোতা–র সিংহাসনের পাশে নিজের জায়গাটা শক্তপোক্ত করছেন। সময় যত এগোচ্ছে সেটাই প্রমাণ করছেন ব্যারেটো পরবর্তী জমানার বাগান সমর্থকদের ‘প্রাণভোমরা’ নর্ডি। এদিন ম্যাচে করলেন জোড়া গোল। আবার নিখুঁত ঠিকানা লেখা পাস বাড়িয়ে কাৎসুমিকে দিয়ে গোল করালেনও। ম্যাচ জিততে আর কী চাই।
বিরতির আগেই ২–০ এগিয়ে যায় মোহনবাগান। গোলের লকগেট খুলল ২৬ মিনিটে। গোল করে দলকে এগিয়ে দেন কাৎসুমি। কিন্তু গোলটার ক্ষেত্রে নর্ডির অবদান বেশি। লেনির থ্রু একটা পাস ধরে মাঝমাঠের একটু ওপর থেকে দৌড় শুরু করেন। বিপক্ষের দুজনকে হেলায় কাটিয়ে কাৎসুমির উদ্দেশে সনি যে বলটি রাখেন, সেখান থেকে গোল করতে ভুল করেননি জাপানি কাৎসুমি। দ্বিতীয় গোলটা একক দক্ষতায় করে ব্যবধান (২–০) বাড়ান সঞ্জয়ের দলের সেই হাইতিয়ান তারকা।
দ্বিতীয়ার্ধেও বেশ কয়েকবার গোলের সুযোগ এসে গিয়েছিল নর্ডির কাছে। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে একটি শট ও ৫৭ মিনিটে তঁার একটি ফ্রি–কিক অল্পের জন্য ‘মিস’। না হলে স্কোরলাইন বদলে যেতেই পারত। ৭৩ মিনিটে নর্ডিকে তুলে গ্লেনকে নামান বাগান কোচ। বারাসতে গোটা গ্যালারি তখন ‘সনি–সনি’ জয়ধ্বনিতে ফেটে পড়েছিল। আরও একবার হয়েছিল, সেটা ম্যাচের ৫২ মিনিটে। জেজের পাস ধরে আরও একবার বিপক্ষের জাল কাঁপিয়ে ব্যবধান ৩–০ করেন নর্ডি।
ম্যাচের শুরুটা ভালই করে সঞ্জয়–ব্রিগেড। একটু–আধটু রক্ষণের ভুলত্রুটি ছাড়া বাগানের খেলায় জমাট ভাব লক্ষ্য করা যায়। তবে, মিডফিল্ডার প্রণয় হালদারকে ১৮ জনের দলে রাখেননি মোহন–কোচ। কার্ড থাকায়। তঁার বদলে নামা বিক্রমজিৎ আপ্রাণ চেষ্টায় কোনও খামতি রাখেননি। গ্লেনের বদলে ফরোয়ার্ডে জেজের সঙ্গী হয়েছিলেন আজহার।
তাতে অসুবিধে কিছু হয়নি। সনি মাঠে যতক্ষণ ছিলেন, তঁার পায়ে বল গেলেই বিপক্ষের রক্ষণ কঁাপতে থেকেছে। সালগাঁওকারের আক্রমণ দানা বাঁধতে শুরু করে দ্বিতীয়ার্ধের ১০ মিনিট পর থেকে। তবে, ততক্ষণে যা হওয়ার হয়ে গেছে।
দ্বিতীয়ার্ধে সালগাঁওকারের কেলভিনের শট দুরন্ত বাঁচান দেবজিৎ। ব্রায়ান মাসচেরানাসের শট রাজু গায়কোয়াড়ের গোললাইন সেভ ছাড়া তেমন কিছু সুবিধে করতে পারেনি গোয়ার দলটি। ম্যাচের অন্তিম লগ্নে সালগাঁওকারের কফিনে শেষ পেরেকটি পুঁতে দেন জেজে।
সেইসঙ্গে অ্যাওয়ে–হোম মিলিয়ে ৭–২ গোল পার্থক্যে সেমিফাইনালে পৌঁছে গেল সবুজ–মেরুন। গতবারের ফেড কাপের বদলা নেওয়ার কাজটা সেরে ফেলল তারা। ৮ মে বারাসতে সেমিফাইনালের প্রথম লেগে শিলং লাজংয়ের মুখোমুখি হবেন জেেজরা।
মোহনবাগান: দেবজিৎ, প্রীতম, লুসিয়ানো, কিংশুক (রাজু), ধনচন্দ্র, সনি (গ্লেন), বিক্রমজিৎ, লেনি (শৌভিক), কাৎসুমি, জেজে, আজহারউদ্দিন।
No comments:
Post a Comment