Blogger Tips and TricksLatest Tips And TricksBlogger Tricks

Tuesday, May 3, 2016

র‌্যান্টিদের উজ্জীবিত করলেন চাপে থাকা মরগ্যান

‘না জিততে পারলে সিজন ওভার’



ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন হয়ে ইতিহাস রচনা করেছে লেস্টার সিটি এফ সি। যার গর্বে আপ্লুত ইস্ট বেঙ্গল কোচ ট্রেভর জেমস মরগ্যান। বুধবার বারাসত স্টেডিয়ামে লাজংয়ের বিরুদ্ধে ফেডারেশন কাপের কোয়ার্টার ফাইনালে দ্বিতীয় রাউন্ডে প্রায় নকআউট ম্যাচে খেলতে নামার আগে ‘লেস্টার-মডেল’ দিয়ে র‌্যান্টিদের উজ্জীবিত করলেন লাল-হলুদ কোচ।
যে ম্যাচে ন্যূনতম এক গোলে জিতলেই ইস্ট বেঙ্গল ফেড কাপ সেমি-ফাইনালে খেলার ছাড়পত্র পেয়ে যাবে। কিন্তু মঙ্গলবার সকালে সল্টলেক সেন্ট্রাল পার্কের মাঠে অনুশীলনে ইস্ট বেঙ্গল শিবির দেখে মনে হল, সেই জেতার খিদেটাই নেই। দলে একগাদা চোট-আঘাত। মরগ্যান মিডিয়ার সামনে চোটের তালিকা বলতে গিয়ে হোঁচট খেলেন। কেভিন লোবো, বিকাশ জাইরু, অবিনাশ রুইদাস, রবার্ট, বার্নার্ড মেন্ডি, শেহনাজ সিংরা চোটের তালিকায়। দলের মধ্যে বাঁধন-টিম স্পিরিটও উধাও। আই লিগে ব্যর্থ, লাজংয়ের কাছে টানা দুটি ম্যাচে হারের পর লাল-হলুদ শিবিরের কাঁধ ঝুলে গিয়েছে। ম্যান ম্যানেজমেন্ট স্কিল কাজে লাগিয়ে ফুটবলারদের উজ্জীবিত করার চেষ্টা করছেন মরগ্যান। এদিন যেমন ফুটবলারদের সঙ্গে জনে জনে আলাদা করে কথা বললেন লাল-হলুদ কোচ। মুখে তাঁর ‘লেস্টার-মডেল’। মরগ্যান বললেন, ‘ইস্ট বেঙ্গলের সঙ্গে লেস্টারের তুলনায় যাচ্ছি না। কিন্তু দলটা তারকা খচিত না হয়েও কম বাজেটের দল নিয়ে ই পি এল জিতে গেল! টিম স্পিরিট থাকলে এমনই ফল হয়। আমরা মূল্যবান শিক্ষা পেলাম। ফুটবলারদের সেই কথাই বলেছি।’ একদা লেস্টারে গিয়ে প্রীতি ম্যাচ খেলা, তাদের সঙ্গে গাঁটছড়া বাধার মেয়াদ সংক্ষিপ্ত হওয়ার জন্য আপসোস লাল-হলুদ শিবিরে। তবে লাল-হলুদে এখন প্রশ্ন, বুধবার লাজংয়ের কাছে হারলে ইস্ট বেঙ্গল আগামী মরশুমে মরগ্যানের সঙ্গে চুক্তি করবেন? গত দু’বার মরগ্যানের সঙ্গে আলোচনায় বসলেও আগামী মরশুমের চুক্তি নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে কোনও কথা হয়নি। কর্তারাও দেখে নিতে চাইছেন, ফেডারেশন কাপে মরগ্যানের কোচিংয়ে ইস্ট বেঙ্গল কেমন ফল করে। অর্থাৎ আপাতত ইস্ট বেঙ্গলে মরগ্যানের কোচিং ভবিষ্যৎ আলো-আঁধারির মধ্যে রয়েছে। 
তবে বুধবার লাজংকে হারাতে মরিয়া মরগ্যান। ময়দানে প্রচলিত কথা, পাহাড়ে কেঁপে যান ব্রিটিশ কোচ। ফলে ইস্ট বেঙ্গলে ফেড কাপের ‘লাকি’ কোচ নিজের সম্মান রক্ষার পাশাপাশি দলের সম্মান রক্ষা করতে সচেষ্ট। বললেন, ‘বুধবার না জিতলে সিজন ওভার। এবছরের মতো সব আশা শেষ। ক্ষণিকের ভুলে আমরা বাজে গোল খাচ্ছি। যা ম্যাচে পার্থক্য গড়ে দিচ্ছে।’ মঙ্গলবার অনুশীলনে তিনি ‘কিক অ্যান্ড রান’ ফুটবলের উপর জোর দিলেন। নিজেদের মধ্যে বেশি পাস খেলা নয়, সাইডব্যাক বা উইং হাফদের ক্রমাগত ক্রস, সেন্টার রাখতে বললেন বিপক্ষ বক্স লক্ষ্য করে। যাতে ঘনঘন গোলের সুযোগ তৈরি হয়। একইসঙ্গে দেখা গেল রিজার্ভ বেঞ্চে বসে থাকতে থাকতে মরচে পড়ে যাওয়া জনি রাউথ, কৌশিক সরকার, নিখিল পূজারিদের মতো জুনিয়র ফুটবলারদের ধার বাড়াতে শান দেওয়ার কাজ করছেন মরগ্যান। জনি, কৌশিকদের নাম এবছর ভুলেই গিয়েছিলেন লাল-হলুদ প্রেমীরা। আগামী বছরের কথা ভেবেই জুনিয়র ফুটবলারদের তুলে আনার চেষ্টা করছেন মরগ্যান। 
ফেডারেশন কাপের অ্যাওয়ে ম্যাচে লাজংয়ের কাছে হারের পর ডিফেন্ডারদের দোষারোপ করেছিলেন ব্রিটিশ কোচ। এদিনও তিনি একটু ঘুরিয়ে রক্ষণ নিয়ে চিন্তা প্রকাশ করলেও কিছুটা আড়ালও করলেন। বললেন, ‘সবে দুটি ম্যাচ আমার কোচিংয়ে খেলেছে ইস্ট বেঙ্গল। তাতেই তীব্র সমালোচনা হচ্ছে। কিন্তু লাজংয়ের কৃতিত্ব নিয়ে কেউ বলছে না।’ লাজংকে কৃতিত্ব দেওয়া মানে তো আপনি ব্যর্থতা স্বীকার করছেন? এই প্রশ্নে হেসে ফেলেন মরগ্যান। 
প্রথম একাদশে বেশি পরিবর্তন করতে নারাজ মরগ্যান। রাইটব্যাক দীপক মণ্ডলের জায়গায় সামাদ আলি মল্লিককে দেখে নিলেন মরগ্যান। এদিন নিজেদের মধ্যে ম্যাচ না খেলে অর্ণব, দীপক, র‌্যান্টি, ডং, মেহতাব মাঠের পাশে হাল্কা স্ট্রেচিং ও জগিং করেন। তারপর ক্লান্তি কাটাতে, মাসল টিউনিং করতে বরফগলা জল থাকা ড্রামের মধ্যে শরীর ডুবিয়ে দিলেন র‌্যান্টি,ডংরা। প্র্যাকটিস ম্যাচে স্টপারে বেলোর পাশে মরগ্যান পরীক্ষা করলেন একদা বিশ্ববিদ্যালয় ফুটবল থেকে সরাসরি জাতীয় দলে নির্বাচিত হওয়া কৌশিক সরকারকে। বেলোকে এদিন অ্যাটাকেও ব্যবহার করলেন মরগ্যান। হ্যামস্ট্রিংয়ে সাপোর্ট নিয়ে প্র্যাকটিস ম্যাচে চুটিয়ে খেললেন বার্নার্ড মেন্ডি। তিনি ম্যাচে ১৮ জনের স্কোয়াডে থাকছেন। লাজং দলটার গতি, মাঝমাঠ থেকে পেনের মতো বল ফিড করার কার্যকরী ফুটবলার রয়েছে। লাজংয়ের গতি থামাতে ইস্ট বেঙ্গল তাকিয়ে রয়েছে সেই মেহতাব হোসেনের দিকে। ইস্ট বেঙ্গলের সিনিয়র ফুটবলার সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে অভিমান প্রকাশ করে বলেছেন, দলের ব্যর্থতায় তাঁকে দায়ী করা হচ্ছে। এটা কাম্য নয়। ইস্ট বেঙ্গলের হয়ে দিনের পর দিন চোট উপেক্ষা করেও দলের স্বার্থে খেলেছেন। এরপরেও তাঁর দায়বদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। মঙ্গলবার অনুশীলন শেষে জনাকয়েক সমর্থক মেহতাবকে নিয়ে সেলফি তোলার আবদার করলেন। গাড়িতে ওঠার আগে ইস্ট বেঙ্গলের ‘মিডফিল্ড জেনারেল’ সমর্থকদের বললেন, ‘আপনারা মাঠে আসুন। বারাসতে দর্শকদের চিৎকারই আমাদের জিতিয়ে দেবে। অতীতেও যা একাধিকবার হয়েছে।’
Source - Bartaman

No comments:

Post a Comment