সাত দিনে পরপর দু’বার হার! ভাবা যায় না। তাও আবার লাজং এফ সি–র মতো দলের বিরুদ্ধে। তাঁর কোচিংয়ের প্রথম ইনিংসেও বারবার ট্রেভর মর্গানকে ধাক্কা খেতে হয়েছিল লাজংয়ের কাছে। এবার দ্বিতীয় ইনিংসের প্রথম ম্যাচেই হার। ফেড কাপের প্রথম ম্যাচে। সেই ধাক্কা মর্গান বা তাঁর ফুটবলাররা কতটা সামলাতে পেরেছেন, সেটা বোঝা যাবে বুধবার বিকেলে। বারাসতে।
নয়া নিয়মের ফেড কাপে সেই লাজংয়ের বিরুদ্ধে বুধবার খেলতে নামার আগে ইস্টবেঙ্গল কোচ মর্গান বলেই দিলেন, ‘জানি না আপনারা লাজংকে কীভাবে দেখেন? ঘরের মাঠে লাজং সত্যিই খুব ভাল দল। ওরা লড়াই করতে জানে। তবে এটুকু বলতে চাই, ২–১ ফলাফল খারাপ নয়। ২–০ ফল হলে কাজটা আমাদের পক্ষে কঠিন হত। পরিস্থিতি এখনও আমাদের হাতের মধ্যে রয়েছে। আসল কথা হল, ম্যাচটা জিততে হবে।’ অ্যাওয়ে ম্যাচে ১ গোল দিয়েছে ইস্টবেঙ্গল। বুধবার ১ গোলে বারাসতে জিততে পারলেই সেমিফাইনােল ওঠার ছাড়পত্র পাবে মর্গানের দল।
মঙ্গলবার সকালে বিধাননগরের সেন্ট্রাল পার্কে মর্গানের অনুশীলনে ম্যাচের প্রথম ১১ বোঝা না গেলেও দলে পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়ে রাখলেন মর্গান। বার্নার্ড মেন্ডি মঙ্গলবার সকালে মিনিট তিরিশেক অনুশীলন করলেও তিনি খেলবেন কি না, তা নিয়ে আদৌ নিশ্চিত নয় লাল–হলুদ শিবির। ইস্টবেঙ্গল কোচের বক্তব্য, ম্যাচের দিন সকালে মেন্ডিকে আরও একবার দেখবেন। তার পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। লাল–হলুদ শিবিরের চোটের তালিকা জানিয়ে দিলেন কোচ। তািলকাটি হল: বিকাশ জায়রু, রবার্ট, লোবো, অবিনাশ রুইদাস, রাহুল ভেকে এবং মেন্ডি। তা সত্ত্বেও দলগঠন নিয়ে চিন্তা নেই মর্গানের।
গরম–আর্দ্রতায় বিপক্ষের তো সমস্যা। না, েসভাবে দেখছেন না মর্গান। ‘দুপুর ১টায় ম্যাচ হলে ভাবতাম।’ উল্টোদিকে লাজং কোচ থামবই সিন্টো অবশ্য ম্যাচের সময় (সাড়ে ৪টে) নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করলেন বাংলাতেই। পরিষ্কার বাংলায় বলে উঠলেন, ‘আপনারাই বলুন। এই গরমে ম্যাচের সময় ঠিক? আমার দলের ফুটবলারদের জন্য বলছি না। ইস্টবেঙ্গল ফুটবলারদের কথা ভেবেও বলছি। একে ৩৮–৩৯ ডিগ্রি তাপমাত্রা, তার পর ফিল্ড টার্ফে খেলা। গরম আরও বাড়িয়ে দেয় ২–৩ ডিগ্রি। এটা কি ফুটবলের জন্য ভাল বিজ্ঞাপন? ভাবা উচিত ছিল।’ লাজংয়ের পক্ষ থেকে ম্যাচের সময় আরও আধঘণ্টা পিছিয়ে দেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছিল। কিন্তু তা মেনে নেওয়া হয়নি।
সাত দিনের মাথায় দু’বার ইস্টবেঙ্গলকে হারানোর পিছনে রহস্য কোথায়? হাসছেন লাজং কোচ। ‘আসলে সব দলই চায় ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান, বেঙ্গালুরু এফ সি–র মতো কঠিন দলের বিরুদ্ধে ভাল খেলতে। আমরাও সেরকম ভাল খেলার চেষ্টা করি। নিজেদের সেরাটা দিতে সব সময় প্রস্তুত থাকে ছেলেরা। যেমন, শেষ ম্যাচে ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে আমার দলে ৮ জন অনূর্ধ্ব–২২ ফুটবলার খেলেছে। আমরা আই িলগের শুরুতে ভাল খেলতে পারিনি। পরে শেষ দিকে দলের রদবদল ঘটিয়ে দলের মধ্যে ভারসাম্য এসেছে। যেমন খেলছি আমরা ইদানীং সেরকমই খেলতে চেষ্টা করব।’ বিপক্ষ লাজংয়ের স্ট্রাইকার ব্রাজিলের উইলিয়ামের প্রশংসা করেছেন মর্গান। ‘খুব ভাল স্ট্রাইকার। পাশাপাশি বল এয়ারে থাকাকালীন বেশ বিপজ্জনক।’
ইস্টবেঙ্গলের ডং জানাচ্ছেন, ‘যেভাবেই হোক আমাদের জিততে হবে। ডু অর ডাই ম্যাচ। নতুন কোচ এলে আমাদের পেশাদার ফুটবলার হিসেবে তাঁর সঙ্গে নিজেদের দ্রুত মানিয়ে নিতে হবে। আমার সঙ্গে রন্টির বোঝাপড়া বেশ ভাল। আশা করছি গোল পেতে সমস্যা হবে না। যাই হোক ম্যাচটা আমাদের জিততে হবে।’ লাজংয়ের ব্রাজিলীয় তারকা ফুটবলার উইলিয়াম বলছিেলন, ‘আমরা আই লিগে একটা অদ্ভুত গোলে ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়েছিলাম। তার পর থেকে আমাদের আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায়। পরের ম্যাচে অর্থাৎ ফেড কাপের প্রথম ম্যাচে সেই আত্মবিশ্বাস কাজে লাগে। এবারও আমরা আত্মবিশ্বাসী ইস্টবেঙ্গলকে হারাতে।’ লাজংয়ের পেন ওরজির বিশ্বাস, ‘আমরা জেতার জন্যই মাঠে নামব। ইস্টবেঙ্গলকে আমরা হারাতে পারি তা দু’বার প্রমাণিত। তৃতীয়বারও সেই চেষ্টা করব।’
Source - Aajkal
No comments:
Post a Comment