‘গরম ভাতে মাছের ঝোল, সনির পাশে জেজের গোল’। কিংবা ‘চিংড়ি খাব ভেজে আর গোল করবে জেজে।’ এমন স্লোগান আপনি এখন মোহন বাগান তাঁবুতে কান পাতলেই শুনতে পাবেন। কর্নেল গ্লেনের পর জেজেই এখন মোহন বাগানের দ্বিতীয় সর্বাধিক গোলদাতা। শিলিগুড়ি ডার্বিতে পেনাল্টি মিস করলেও শেষ মরশুমে প্রবলভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন তিনি। অর্জন করেছেন সমর্থকদের ভালোবাসা।
ইদানীং মোহন বাগান অনুশীলন থেকে ফেরার পর তাঁর নামে এমন স্লোগান এখন নিয়মিত ওঠে। রোজই তাঁর দিকে এগিয়ে আসেন সমর্থকরা। থাকে সেলফি তোলার কাতর আবেদন। এখন অনেকটাই তারকা মর্যাদা পাচ্ছেন জেজে। রবিবার তাঁকে জিজ্ঞাসা করি, সমর্থকদের এই ভালোবাসা দেখে কলকাতা লিগে কি খেলতে ইচ্ছা করছে আপনার? কোনও বাড়তি আবেগ অনুভব করছেন কলকাতাকে নিয়ে? জেজে বলে দিলেন, ‘ফেড কাপ শেষ হলে আইএসএলের দল চেন্নাই এফসি’তেই সরাসরি ফিরে যাব। কলকাতা লিগে খেলার কোনও ইচ্ছা নেই। ডিসেম্বরে আমি আবার আই লিগ ক্লাবে ফিরে আসতে চাই। আগামী ছয় মাস শুধুই আইএসএল আর জাতীয় দল। আমি জানি মোহন বাগান থেকে আইএসএলে গেলে হয়তো এএফসি কাপের কোয়ার্টার ফাইনালে খেলার সুযোগ আসতে পারে। কিন্তু আমি ওই ম্যাচ নিয়ে আগ্রহী নই। কলকাতা লিগ, আইএসএল খেলে ফের আই লিগে ফিরলে ক্লান্ত হয়ে পড়তে হবে। আমি কোথাও স্থানীয় লিগ খেলতে চাই না। তবে ডিসেম্বরে আই লিগ ক্লাবে ফেরার সময়ে মোহন বাগান চাইলে শতাব্দী প্রাচীন ক্লাবের কথা নিশ্চয়ই গুরুত্ব দিয়ে ভাবব। দু’বছর এই ক্লাবে খেললাম। দু’বছরই ক্লাবে আর্থিক সঙ্কট ছিল। তবে অর্থ সচিব-সহ সচিব যোগাযোগ রেখে চলেছিলেন। কোনও সমস্যা হয়নি। এক কর্মী দেখাশোনা করেছেন। কোচ সঞ্জয় স্যারকে দীর্ঘদিন চিনি। ক্লাব চাইলে মোহন বাগানের কথা নিশ্চয় আগে ভাবব।’ কর্তারাও জেনে নিয়েছেন জেজেকে কলকাতা লিগে পাবেন না। তাই আজহারকে তাঁরা কলকাতা লিগে জেজের বিকল্প হিসাবে ভাবছেন।
লেনিও জানিয়ে গেলেন, ‘মোহন বাগানে গত পাঁচ মাসের অভিজ্ঞতা যথেষ্ট সুখের। চোটের জন্য প্রথম দিকে খেলতে না পারলেও শেষ দিকে নিয়মিত খেলেছি। সমর্থকদের ভালোবাসাও পেয়েছি। তবে কলকাতা লিগে মোহন বাগানে হয়ে খেলার কোনও সম্ভাবনা নেই। পুনে সিটিএফসি যোগাযোগ করেছে। পুনের হয়ে আইএসএল খেলেই ফিরে আসব আই লিগ ক্লাবে। তখন বাগান চাইলে নিশ্চয় ভেবে দেখব।’
এদিকে, ফুটবলারদের বকেয়া পেমেন্ট দিতে আবার এগিয়ে এলেন সভাপতি। এই নিয়ে গত ২০ মাসে আট বার পেমেন্ট দিলেন তিনি। এদিন দুই কোটি মোহন বাগানের ফান্ডে ট্রান্সফার করেন সভাপতি। ই-ব্যাঙ্কিংয়ে তা সোমবারের মধ্যে ঢুকে যাবে ফুটবলারদের অ্যাকাউন্টে। তিনি নিজে ক্লাবে এসে কোচ সঞ্জয় সেনের সঙ্গেও কথা বলেন আলাদা করে। যাবতীয় বকেয়া মরশুম শেষে মিটিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেন। এদিনই প্রথম প্রকাশ্যে ফরাসি সংস্থার সঙ্গে সম্ভাব্যর চুক্তির কথা স্বীকার করেন মোহন বাগান কর্তারা। যদিও অর্থ সচিব বলেন, ‘একটি বিশেষ সংস্থার জন্যই ফরাসি সংস্থার সঙ্গে ডিল হয়েও হচ্ছে না।’ সভাপতিও এই সময়ে সমর্থন করেন অর্থ সচিবকে। মোহন বাগান অর্থ সচিব প্রশ্ন তোলেন, ‘এখন ভারতীয় ফুটবলে আইএসএলই সব। আমরা এএফসি কাপের কোয়ার্টার ফাইনালে উঠলে সেপ্টেম্বরে খেলা পড়বে। কোনও ফ্র্যাঞ্চাইজি ফুটবলার ছাড়তে চাইছে না। অথচ আমরা দেশের প্রতিনিধিত্ব করব। ফেডারেশন কর্তাদের বললে ওরা নীরব। এএফসি কাপে খেলে কোনও লাভ নেই। আমরা যুবভারতীতে এএফসি কাপ খেলতে পারলাম না। এটিকে কিন্তু খেলবে। গুয়াহাটিতে এএফসি কাপ খেলতে বাধ্য হওয়ার জন্য আমাদের ১৮ লাখ ক্ষতি হয়েছে।’
No comments:
Post a Comment